ইউনানী-আয়ূর্বেদ মেডিকেল কলেজে জাল সনদে চাকরি করছেন দৌলত আল মামুন!পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাখ্যা তলব

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর তদন্ত কমিটি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে দৌলত আল মামুন’র জাল জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি নেয়া প্রমান হওয়া সত্ত্বে কোন এক অদৃশ্য কারনে তিনি এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন দৌলত আল মামুন কি আইন আদালতের উর্ধ্বে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক মুক্তির ডাক পত্রিকায় এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ২৬/১০/২০২৩ তারিখে কলেজের প্রিন্সিপাল বরাবর ব্যখ্যা চেয়ে চিঠি ইস্যু করে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এর অল্টারনেটিভ মেডিসিন এর পরিচালক ডা. মো: মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্রে অধ্যক্ষকে পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য,ডকুমেন্টস ও মতামত প্রদান করতে বলা হয়। কিন্ত দৌলত আল মামুন’র আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা অধ্যক্ষ স্বপন কুমার দত্ত প্রকৃত বিষয় আড়াল করে দায় সারা গোছের জবাব দাখিল করেছে বলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে।
সরকারি ইউনানী-আয়ূর্বেদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জাল শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার সনদ দিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে চাকরি নেয়া সহকারি অধ্যাপক(আয়ূর্বেদ মেডিসিন) ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন রহস্যজনক কারনে এখনো স্বপদে বহাল আছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের গঠিত কমিটির তদন্তে জালিয়াতি প্রমানিত হওয়ায় তদন্ত কমিটি ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন-কে অপসারনের নির্দেশ দিয়েছে। অথচ দেশের বিদ্যমান আইন কানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে অবৈধভাবে পদ দখল করে রেখেছেন।সরকারি বেতন তুলছেন। কলেজের অধ্যক্ষ ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন এর বেতনের জন্যে নিয়মিত ডিও লেটার পাঠাচ্ছেন।কলেজের অধ্যক্ষ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,স্বাস্থ অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তার অনৈতিক আশীর্বাদের কারনে ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন এখনো সরকারি বেতন তুলছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধিন জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি এর আওতায় অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার শীর্ষক অপারেশন প্লানের আওতায় বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগের জন্যে ২০/৫/২০১৪ তারিখে সংবাদ মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি করা হয়।উপরোক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্রমিক নং-২ তথা সহকারি অধ্যাপক(আয়ূর্বেদ মেডিসিন) পদে নিয়োগ লাভের জন্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার যে শর্ত আরোপ করা হয়েছিল;তার ২ নং শর্ত অনুযায়ী উক্ত পদের জন্যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি সহ সরকারি ইউনানী-আয়ূর্বেদ কলেজে চার বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল।
উক্ত পদে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী আয়ূর্বেদিক মেডিসিন বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি নেই।বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত উক্ত বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি চালু হয়নি। ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন একটি এনজিও প্রদত্ত জাল সনদ দাখিল করেন। অনুসন্ধান করে সনদ প্রদানকারি এনজিও ”বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন” নামে কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, উক্ত সনদ পত্রটি নিয়ম অনুযায়ী বাংলােেদশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ইস্যু করা হয়নি।অন্যদিকে ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন সরকারি ইউনানী-আয়ূর্বেদ কলেজে থেকে যে চার বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা সনদ দাখিল করেছেন তাও ভূয়া বলে প্রমানিত হয়েছে। কলেজের তৎকালিন অধ্যক্ষ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে উক্ত ভূয়া অভিজ্ঞতার সনদ সরবরাহ করেছেন বলে জানাগেছে।
উল্লেখ্য , দৌলত আল মামুন’র জালিয়াতি প্রকাশিত হওয়ার পর;স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার এর পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর চিঠি দিয়ে তাকে পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কমিটির থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্যে অনুরোধ জানানো হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিটির তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হওয়ার পর; ডা: আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন তথা অপসারনের নির্দেশ দেয়ার পরও তিনি কিভাবে স্বপদে বহাল আছেন এবং তার খুটির জোর কোথায় এটাই সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন। দ্রুত তাকে সহকারি অধ্যাপকের পদ থেকে অপসারন করে;এ যাবত তার গ্রহন করা বেতন ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টগণ।
এবিষয়ে দৌলত আল মামুন’র বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।